ডেথ বোলিংয়ের শ্রেষ্ঠত্ব: যশপ্রীত বুমরা বনাম মোস্তাফিজুর রহমান

ডেথ বোলিংয়ের শ্রেষ্ঠত্ব: যশপ্রীত বুমরা বনাম মোস্তাফিজুর রহমান
বিশেষ প্রতিবেদক
কিছু প্রশ্ন উত্তরের চেয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে বেশি। টি-টোয়েন্টিতে সেরা ডেথ বোলার নিয়ে যশপ্রীত বুমরা ও মোস্তাফিজুর রহমানের তুলনা ঠিক তেমনই। একসময় দুজনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল উত্তেজনায় ভরপুর। তবে বর্তমান বাস্তবতায় দুজনের পারফরম্যান্সের মধ্যে পার্থক্য এতটাই বিশাল যে তুলনার ভিত্তি আর আগের মতো নেই।২০১৬ সালে মোস্তাফিজুর রহমান ও যশপ্রীত বুমরা যখন আইপিএলে তাদের প্রতিভা দেখাচ্ছিলেন, তখন এই দুই উঠতি তারকার মধ্যে তুলনা ছিল স্বাভাবিক। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে মোস্তাফিজের কাটারগুলো যেমন আলো ছড়িয়েছে, তেমনি মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের হয়ে বুমরার ইয়র্কারগুলো ছিল প্রশংসিত।সেই মৌসুমে আইপিএল কর্তৃপক্ষ দর্শকদের কাছে জানতে চেয়েছিল, ডেথ বোলিংয়ে কে সেরা? মোস্তাফিজ পান ৪৮ শতাংশ ভোট। ভারতীয় সমর্থকদের শক্ত ঘাঁটিতেও মোস্তাফিজ এত ভোট পেয়েছিলেন। কিন্তু আজকের বাস্তবতায় এমন সমর্থন কল্পনাও কঠিন।একসময় প্রতিপক্ষের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ ছিলেন মোস্তাফিজ। কিন্তু সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে সেই ঝাঁজ অনেকটাই হারিয়ে গেছে। সর্বশেষ বিপিএলে ৭ ম্যাচে ৭ উইকেট নেওয়া মোস্তাফিজ প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ংকর হতে পারছেন না। জাতীয় দলের পারফরম্যান্সেও একই চিত্র। গত সেপ্টেম্বরে ভারতের বিপক্ষে সিরিজে ১২ ওভারে ১১.২৭ ইকোনমি রেটে ১২৪ রান দিয়ে নিয়েছিলেন মাত্র ৪ উইকেট।আইপিএল ও পিএসএলের মতো জনপ্রিয় লিগগুলোতে মোস্তাফিজের চাহিদা কমে যাওয়া তাই আশ্চর্যের কিছু নয়। এবারের পিএসএল ড্রাফটে কোনো দলই তাকে দলে নেয়নি।অন্যদিকে যশপ্রীত বুমরা নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। চোটের কারণে মাঝে কিছুটা সময় মাঠের বাইরে থাকলেও ভারতীয় পেস আক্রমণের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে তিনি সেরা ডেথ বোলারদের একজন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। তার নিয়মিত ইয়র্কার, বুদ্ধিদীপ্ত ভ্যারিয়েশন এবং চাপের মুখে দুর্দান্ত বোলিং তাকে বিশ্ব ক্রিকেটে অনন্য করেছে।মোস্তাফিজুর রহমানের ক্যারিয়ারের উত্থান-অধঃপতন দেখলে প্রশ্ন জাগে, তিনি কি আবারও ফিরে আসতে পারবেন? বাঁহাতি পেসার হিসেবে তার সামর্থ্য এখনো মূল্যবান হতে পারে। তবে ফর্ম পুনরুদ্ধারে কাজ করতে হবে শরীরের ফিটনেস, ভ্যারিয়েশন এবং মানসিক দৃঢ়তার ওপর।একসময় মোস্তাফিজের কাটারে কাঁপত ক্রিকেট বিশ্ব। এখন প্রয়োজন সেই হারানো ছন্দ ফিরে পাওয়ার। বুমরার সঙ্গে তুলনা হয়তো আর সম্ভব নয়, কিন্তু নিজের স্বকীয়তা দিয়ে মোস্তাফিজ কি আবার আলো ছড়াবেন? উত্তর দেবে সময়।