ডবলমুরিং থানা এলাকায় প্রকাশ্যে মাদক বেচাকেনা নিয়ে উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী

সময়: 2:50 am - March 27, 2025 | | পঠিত হয়েছে: 36 বার

মুহাম্মদ এরশাদ, চট্টপ্রাম থেকে ॥ চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার বিভিন্ন এলাকায় হাত বাড়ালেই মিলছে গাঁজা ও ইয়াবা। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ডবলমুরিং থানার বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে চলছে মাদক ক্রয়-বিক্রয়। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী। তারা বলছেন, পুলিশের কার্যক্রমের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে মাদকের কারবার এখন ওপেন সিক্রেট।

কিশোর ও তরুণরা এ কাজে যুক্ত। পুলিশ যেন দেখেও দেখে না। পত্রপত্রিকায় এ সংক্রান্ত খবর ছাপা হলেও মেলেনি সুফল। মাদক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযানও চোখে পড়েনি। যদিও নগর পুলিশ বলছে, পুলিশের কার্যক্রম অনেক সক্রিয়। থানা এলাকায় ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

জানা গেছে, বিগত সরকার পতনের পর পটপরিবর্তন হলেও থেমে নেই মাদক কারবার। এর মধ্যে সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় ইয়াবার প্রতি আগ্রহ বেশি বিক্রেতাদের। ব্যবসায়ীদের ভাষ্যে, দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতাকে পুঁজি করে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান ঢুকেছে। চেকপোস্ট ছিল না। তখন ছাত্র আন্দোলনের ওপর সবার চোখ। এছাড়া ৫ আগস্টের পর থেকে পুলিশের কার্যক্রমও স্থবির। ফলে ডবলমুরিং থানা এলাকায় ইয়াবার খুচরা বিক্রি বেড়েছে দ্বিগুণ।

অভিযোগ আছে, সিএমপির ডবলমুরিং থানা এলাকা মাদক বিক্রির জন্য নিরাপদ অভয়ারণ্য। এই থানা এলাকায় ইয়াবা, গাঁজা বিক্রি হয় প্রকাশ্যে। ডবলমুরিং থানাধীন পাহাড়তলী বাজার এলাকায় মসজিদ কলোনিতে মাদক সম্রাট সালাউদ্দীন এর নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে বিশাল অপরাধ জগৎ। মাদক সম্রাট সালাউদ্দীন এর ডেরায় ইয়াবা, গাঁজা, পাহাড়ি বাংলা মদ, জুয়ার আসর ও পতিতাবৃত্তি চলছে রমরমা। অপরাধ জগতের গডফাদার মাদক সম্র্রট সালাউদ্দীন এর নেতৃত্বে রয়েছে ৪০/৫০ জনের বিশাল কিশোর গ্যাং বাহিনী। তাদের দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করছে অপরাধ জগৎ, মামুন, আজাদ, সোর্স মোবারক, রাকিব, আজগর, আক্তার মাদক সম্রাট সালাউদ্দীন এর অপরাধ জগতের প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করছে।

তথ্যমতে জানাযায়, মাদক সরবরাহ করে ডবলমুরিং থানার সোর্স মামুন, পুলিশের মাসোহারা নিয়ে যায় সোর্স মামুন। মামুনের সাথে রয়েছে ডবলমুরিং থানার কিছু অসৎ পুলিশ অফিসারের সখ্যতা, এটাকেই পুজি করে করছে মাদকের পাইকারি কারবার। বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা ও গাঁজা বিক্রির অবস্থা আরও রমরমা। একুশের কণ্ঠ পত্রিকায় ১১ নভেম্বর ‘চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানা এলাকায় হাত বাড়ালে মিলছে মাদক’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পরেও পাহাড়তলী বাজার মসজিদ কলোনির সালাউদ্দীন এর ডেরায় কোনো অভিযান না হওয়ায় মাদক বিক্রির সংখ্যাও বাড়ছে দিগুণ তিনগুণ পর্যন্ত।

স্থানীয় পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, আগস্টের আগে আড়ালে ইয়াবা, গাঁজা বিক্রি হতো। তেমন কোনো অভিযান হয়নি। ক্রেতারা গ্রেপ্তার হলেও বিক্রেতারা থাকত ধরাছোঁয়ার বাইরে। কিন্তু আগস্টের পর থেকে মাদকের বেচাকেনা চলে প্রকাশ্যে। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণে মাদক ব্যবসায়ীদের যেন এখন সুদিন। সরকার পরিবর্তনের পর র‌্যাবের কার্যক্রম সক্রিয় রয়েছে। এই সংস্থাটি ইয়াবার বড় চালান জব্দ করছে। কিন্তু এলাকা ভিত্তিক খুচরা ব্যবসায়ীদের ডেরায় র‌্যাবের অভিযান পরিচালিত হয়নি। ফলে ব্যবসায়ীদের সাহস দিনের দিন বেড়ে চলছে। কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

মাদকের স্পট সম্পর্কে সমাজকর্মী নুর বেগম বানু বলেন, মাদক সমাজের কোন উপকার করে না, বরং ক্ষতি করে সমাজ ও দেশের। মাদক সেবন করে ধ্বংস হচ্ছে যুবসমাজ। এখন মাদক সেবনে যুক্ত হচ্ছে সরকারি কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। মাদক সেবনের কারণে বাড়ছে দুর্নীতি, ছিনতাই, চুরি ডাকাতি, অসামাজিক কার্যকলাপ। মাদক নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে সমাজ থেকে মাদক কারবারিদের কবর রচনা উচিৎ বলে মনে করি।

এ বিষয়ে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মোঃ রফিক আহমেদ বলেন, এই রকম কোন কিছু আমার জানা নাই। তবে অভিযান চলমান আছে। ঠিক আছে আজ আমি জানতে পারলাম, এখন আমরা ব্যবস্থা নেব।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর