ভ্যাটময় জীবন: প্রতিদিনের খরচে বেড়েছে চাপ

ভ্যাটময় জীবন: প্রতিদিনের খরচে বেড়েছে চাপ
বিশেষ প্রতিবেদক
দৈনন্দিন জীবনযাপনের প্রতিটি স্তরে ভ্যাটের আধিপত্য এখন সাধারণ মানুষের জীবনে বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত প্রতিটি কাজে ভ্যাট দিতে হচ্ছে। সর্বশেষ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নতুন ঘোষণায় শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক এবং ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে এই চাপ আরও বেড়েছে।সকাল শুরু হয় দাঁত ব্রাশের মাধ্যমে। টুথপেস্ট ও ব্রাশ কেনার সময় থেকেই ভ্যাট যুক্ত থাকে। এরপর গোসলের সাবান, শ্যাম্পু, টিস্যু—প্রতিটি পণ্যেই ভ্যাট রয়েছে। টিস্যুর ওপর নতুন করে ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করায় খরচ আরও বেড়েছে।নাশতায় পাউরুটি, জ্যাম, জেলি কিংবা বিস্কুটের মতো পণ্যেও ভ্যাট আছে। বেকারি পণ্যে ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে নাশতার খরচও বেড়েছে।যদিও বাস, ট্যাক্সি বা সিএনজি যাত্রায় ভ্যাট নেই, তবে মেট্রোরেলের টিকিটের ওপর এক বছরের জন্য ভ্যাট প্রত্যাহার করায় নাগরিকরা সাময়িক স্বস্তি পেয়েছেন।রেস্টুরেন্টে খাবারের ওপর ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে প্রতিবার খাবারের খরচ বেড়ে গেছে।আমদানি করা ফল যেমন আপেল, নাশপাতি, মাল্টা ও আঙুরের ওপর ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক রয়েছে। মিষ্টি বা কোমল পানীয় কেনার ক্ষেত্রেও ভ্যাট দিতে হচ্ছে।মোবাইল সিম সেবায় নতুন করে শুল্ক বৃদ্ধি এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে শুল্ক আরোপের ফলে যোগাযোগ খরচ বেড়েছে।ঈদ সামনে রেখে পোশাক কেনার খরচ বেড়েছে। ব্র্যান্ডেড পোশাকের ওপর ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করায় কেনাকাটার খরচ বাড়ছে।রান্নাঘরে ব্যবহার্য কিচেন টিস্যু, বিদ্যুৎ বিল, এমনকি বাড়ির সদস্যদের পোশাক সেলাইয়ের খরচেও ভ্যাট যুক্ত হয়েছে। ছুটির দিনে সিনেমা দেখার টিকিট বা বিনোদনকেন্দ্রের প্রবেশ ফি—সবখানেই ভ্যাট প্রযোজ্য।চশমা, সানগ্লাস কেনা থেকে শুরু করে আকাশপথে ভ্রমণেও শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে।এভাবে প্রতিটি পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট আরোপের ফলে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন খরচে ব্যাপক চাপ পড়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে ভ্যাটের হার বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।