রুশ জ্বালানি খাতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের

রুশ জ্বালানি খাতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের
বিশেষ প্রতিবেদক
রাশিয়ার জ্বালানি খাতে কঠোর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। গতকাল শুক্রবার এ ঘোষণা আসে, যার আওতায় রাশিয়ার বৃহৎ জ্বালানি তেল কোম্পানি গাজপ্রম নেফট এবং সারগাটনেফত গ্যাসসহ ১৮০টিরও বেশি জাহাজকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, জি-৭ ভুক্ত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি রক্ষা এবং রাশিয়ার জ্বালানি খাত থেকে আয়ের প্রবাহ কমাতে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, “পুতিন এখন কঠিন পরিস্থিতিতে আছেন। তাঁর ভয়াবহ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না।”হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাইডেন জানান, এ নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক চাপ আরও বাড়বে। তবে তিনি সতর্ক করেন, এর প্রভাব মার্কিন জনগণের ওপরও পড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে পেট্রলের মূল্য প্রতি গ্যালনে তিন থেকে চার সেন্ট বাড়তে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, “রুশ জ্বালানি তেল কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপ যুদ্ধে রাশিয়ার অর্থের জোগান বন্ধ করবে। এটি ইউক্রেনীয় জনগণের জীবন রক্ষায় সহায়ক হবে।”যুক্তরাজ্যও রাশিয়ার দুটি বৃহৎ জ্বালানি কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ পদক্ষেপকে যুদ্ধকে ত্বরান্বিত করার অর্থায়ন রোধে কার্যকরী হিসেবে দেখছে দেশটি।নিষেধাজ্ঞার খবর বিশ্ববাজারে তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলেছে। গতকাল বিকেলে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ৩.৬ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেল ৭৯.৬৮ ডলারে পৌঁছেছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার তেল সরবরাহ ব্যাহত হলে দাম আরও বাড়তে পারে।রাশিয়া এ নিষেধাজ্ঞাকে ‘ভিত্তিহীন’ এবং ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়েছে। গাজপ্রম নেফট এক বিবৃতিতে এ নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “বাইডেন প্রশাসন নতুন প্রেসিডেন্টের (ডোনাল্ড ট্রাম্প) জন্য জটিল উত্তরাধিকার রেখে যাচ্ছে।”ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, “তেল সরবরাহব্যবস্থা ব্যাহত করার এ পদক্ষেপ রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রের আর্থিক ভিত্তিতে বড় আঘাত হানবে।”মার্কিন অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ৪০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৮৩টি তেলবাহী জাহাজ, তেলক্ষেত্র পরিষেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এবং রাশিয়ার দুটি বৃহৎ জ্বালানি কোম্পানি।বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে। তবে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি বাজারেও এর প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।