ছয় ব্যাংকের অনিয়ম তদন্তে আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা, ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সিদ্ধান্ত আসছে

সময়: 8:42 am - January 9, 2025 | | পঠিত হয়েছে: 37 বার

ছয় ব্যাংকের অনিয়ম তদন্তে আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা, ভবিষ্যৎ নির্ধারণে সিদ্ধান্ত আসছে

বিশেষ প্রতিবেদক

বাংলাদেশে ব্যাংক খাতের সংকট নিরসনে ছয়টি ব্যাংকের সম্পদের প্রকৃত আর্থিক চিত্র বের করতে আন্তর্জাতিক দুটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়াং এবং কেপিএমজি বিশেষ নিরীক্ষা শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগে এই নিরীক্ষা শেষে এসব ব্যাংককে একীভূত করা হবে, অধিগ্রহণ করা হবে, অবসায়ন করা হবে, নাকি পুনরুজ্জীবিত করা হবে—সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

যে ছয়টি ব্যাংক তদন্তের আওতায়

  • ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক
  • এক্সিম ব্যাংক
  • গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক
  • সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক
  • আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক
  • ইউনিয়ন ব্যাংক

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় ইতোমধ্যে এই ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই নিরীক্ষা শেষ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বহুপক্ষীয় ঋণদাতা সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে।এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে চারটির মালিকানায় ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী এস আলম। তার মালিকানাধীন গোষ্ঠী এসব ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের অর্থ নামে-বেনামে তুলে নেয়, যা ফেরত আসছে না। ২০২৩ সালের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন,
“ব্যাংকগুলোর ক্ষতির প্রকৃত চিত্র বের করতে আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে এবং এ প্রতিবেদন আইনি কাজে ব্যবহৃত হতে পারবে।”

নিরীক্ষার দায়িত্ব ও প্রক্রিয়া

  • আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়াং: গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক।
  • কেপিএমজি: ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক।

নিরীক্ষার আওতায় রয়েছে ব্যাংকের সম্পদ মূল্যায়ন, ঋণের গুণগত মান নির্ধারণ, খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের চিহ্নিতকরণ, এবং পরিচালকদের অনিয়ম খতিয়ে দেখা। ব্যাংকগুলো ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে নথিপত্র সরবরাহ শুরু করেছে।কেন্দ্রীয় ব্যাংক চিঠিতে জানায়, ব্যাংকিং খাত সংস্কারের জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। এর লক্ষ্য হলো:

  1. ঋণদানে শৃঙ্খলা আনা।
  2. আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা।
  3. জনগণের আস্থা বৃদ্ধি।

অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা, ঋণ শ্রেণীকরণ, এবং বড় খেলাপি ঋণসহ বিভিন্ন বিষয় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী পর্যালোচনা করা হবে।নিরীক্ষা শেষে এসব ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নেবে—ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণ, অধিগ্রহণ, অবসায়ন, নাকি পুনরুজ্জীবনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।এই উদ্যোগ ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর