ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তনের ঢেউ: অনুপস্থিতির কারণে পদ হারানোর ঝুঁকি

সময়: 5:20 am - January 12, 2025 | | পঠিত হয়েছে: 33 বার

ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তনের ঢেউ: অনুপস্থিতির কারণে পদ হারানোর ঝুঁকি

বিশেষ প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বেসরকারি ব্যাংক খাতে বড় ধরনের পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। পরিচালনা পর্ষদে টানা অনুপস্থিতি ও অনিয়মের অভিযোগে বেশ কিছু ব্যাংকের পরিচালকদের পদ হারানোর ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ–সংশ্লিষ্ট ব্যাংক পরিচালক এবং চেয়ারম্যানদের মধ্যে অনেকেই দেশ ছেড়েছেন বা গা ঢাকা দিয়েছেন। ফলে অনেক ব্যাংক তাদের পরিচালনা পর্ষদের সভার সংখ্যা কমিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে।করোনাকালে পরিচালকদের অনলাইনে সভায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হলেও অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলে এটি বাতিল করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, কোনো পরিচালক পরপর তিনটি সভায় বা তিন মাস অনুপস্থিত থাকলে পদটি শূন্য ঘোষণা করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ১১টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন এনেছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • ইসলামী ব্যাংক
  • সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক
  • গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক
  • ইউনিয়ন ব্যাংক
  • ন্যাশনাল ব্যাংক
  • ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক
  • বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক
  • আল-আরাফাহ্‌ ইসলামী ব্যাংক
  • আইএফআইসি ব্যাংক
  • এক্সিম ব্যাংক
  • ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি)

এসব ব্যাংকের অধিকাংশই এস আলম গ্রুপ এবং আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।অনুপস্থিতির কারণে পদ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন শেখ পরিবারের সদস্য, সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগ–সমর্থিত ব্যবসায়ী এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা।

  • মেঘনা ব্যাংক: চেয়ারম্যান এইচ এন আশিকুর রহমান, পরিচালক ইমরানা জামান চৌধুরী।
  • মধুমতি ব্যাংক: শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, শেখ ফজলে নূর তাপস।
  • মিডল্যান্ড ব্যাংক: চেয়ারম্যান নিলুফার জাফরুল্লাহ।
  • যমুনা ব্যাংক: গাজী গোলাম আশরিয়া, সাইদুল ইসলাম।
  • প্রিমিয়ার ব্যাংক: সাবেক চেয়ারম্যান এইচ বি এম ইকবাল এবং কয়েকজন পরিচালক।
  • মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক: সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াকিল উদ্দিন ও হেদায়েত উল্লাহ।
  • শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক: সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে মুজেরী বলেছেন, “পর্ষদে দক্ষ লোক না থাকায় এত বড় অনিয়ম সম্ভব হয়েছে। এখন শূন্য পদগুলো পেশাদারদের দিয়ে পূরণ করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, শূন্য পদে স্বাধীন পরিচালক নিয়োগ দিলে অনিয়ম কমবে এবং ব্যাংকিং খাত নিয়মের মধ্যে ফিরে আসবে।ব্যাংক খাতে চলমান পরিবর্তন ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে পরিচালনা পর্ষদে নতুন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা হলে দেশের ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর