ভয়েস অব দ্য গ্লোবাল সাউথ সামিটে ড. ইউনূস: নতুন পৃথিবী সৃজনে তরুণেরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ

সময়: 8:25 am - August 17, 2024 | | পঠিত হয়েছে: 50 বার

তৃতীয় ভয়েস অব দ্য গ্লোবাল সাউথ শীর্ষ সম্মেলনে শূন্য কার্বন নির্গমন, সম্পদ কেন্দ্রীকরণ শূন্যে নামিয়ে আনা এবং বেকারত্বের অবসানের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে তরুণদের জায়গা দেয়ার কথাও বলেন তিনি। ড. ইউনূস বলেন, নতুন পৃথিবী সৃজনে তরুণেরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আজ শনিবার (১৬ আগস্ট) তৃতীয় ভয়েসে অব দ্য গ্লোবাল সাউথ শীর্ষ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে এসব বলেন তিনি। নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হওয়া এই শীর্ষ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধান উপদেষ্টা।

বক্তব্যের শুরুতে ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভারতীয় জনগণকে শুভেচ্ছা জানান অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, ভূ-রাজনৈতিক সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন ও কোভিড-১৯ মহামারীর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবে এক জটিল মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে বৈশ্বিক দক্ষিণের ভবিষ্যৎ।

বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ গত ৫ আগস্ট ‘দ্বিতীয় বিপ্লবের’ সাক্ষী হয়েছে। ছাত্রদের নেতৃত্বে এবং জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার ব্যাপারে আমাদের তরুণ প্রজন্ম তাদের আকাঙ্ক্ষা জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পেরেছে। অর্থবহ সংস্কারের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে ঢেলে সাজানোর ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমাদের সরকার অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বহুত্ববাদী গণতন্ত্রে উত্তরণ নিশ্চিত করতে এবং নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, আমাদের অবশ্যই তরুণ এবং শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত সুযোগ দিতে হবে। বৈশ্বিক দক্ষিণের জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশই হচ্ছে তরুণেরা। তারা সমাজের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ। তারা ভিন্ন ও সৃজনশীল। তারা একটি নতুন পৃথিবী তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারা সক্ষম। তারা প্রযুক্তিগতভাবে আগের প্রজন্মের থেকে অনেক এগিয়ে। তারা সব অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। তারা উদ্যোক্তা। তারা চাকরি চায় কারণ, উপভোগ না করলেও চাকরি ছাড়া আর কোনো সুযোগ তারা পায় না। আমাদের দেশগুলোর শিক্ষা ব্যবস্থাও তাদের কেবল চাকরিজীবী হিসেবেই তৈরি করে। এতে তারা তাদের সৃজনশীলতা ভুলে যায়। তবুও মানুষ সৃজনশীল প্রাণী হিসেবে জন্মগ্রহণ করে। তারা প্রাকৃতিকভাবে উদ্যোক্তা। আমাদের সিস্টেমকে নতুন করে সাজাতে হবে।

শীর্ষ সম্মেলনের থিম ‘টেকসই ভবিষ্যতের জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত গ্লোবাল সাউথ’ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা ‘থ্রি জিরো’ অর্থাৎ, শূন্য কার্বন নিঃসরণ, সম্পদ কেন্দ্রীকরণ শূন্যতে নামিয়ে আনা এবং শূন্য বেকারত্বের একটি বিশ্ব গড়ার দর্শন থেকে এ যাত্রা শুরু করতে পারি। সামাজিক ব্যবসাকে যদি আমরা গুরুত্বপূর্ণ স্থান দিই তবে তা কেবল সামাজিক ও পরিবেশগত সমস্যা সমাধানেই ভূমিকা রাখবে না বরং, তিনটি শূন্যের বিশ্ব তৈরির পথও নির্ধারণ করতে পারবে। আমরা সব ধরনের পরিবেশগত এবং সামাজিক সমস্যা সমাধানে সামাজিক ব্যবসা তৈরির জন্য গ্লোবাল সাউথের নেতাদের একসঙ্গে কাজ করার আমন্ত্রণ জানাই।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর