দুর্নীতি মামলা থেকে খালাস পেলেন ড. ইউনূস

সময়: 5:16 pm - August 11, 2024 | | পঠিত হয়েছে: 51 বার

গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীর সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার (১১ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম এ আদেশ দেন।

ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী মামলার প্রসিকিউশন প্রত্যাহারের জন্য আজ আদালতে আবেদন করে দুদক। পরে বিচারক মো. রবিউল আলম ওই আবেদন গ্রহণ করেন।

গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে গত ১২ জুন অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মূল অভিযোগটি এসেছিল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর থেকে। সেখান থেকেই গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ সংবলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠানো হয়। সেই সূত্র ধরে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই দুদক অভিযোগটি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি করে।

দুদকের লিগ্যাল অ্যান্ড প্রসিকিউশন উইংয়ের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম বিষয়টি নিয়ে বণিক বার্তাকে সম্প্রতি বলেন, এগুলো তো হুকুমের মামলা। জোর করে বানানো মামলা। দুদক তো মেরিট দেখে মামলা করেনি। অর্ডার পেয়ে মামলা দায়ের করেছে। এখন দুদক মামলা প্রত্যাহার করবে। দুদক আইনেই তো মামলা প্রত্যাহারের বিধান রয়েছে। কমিশনের সিদ্ধান্তই যথেষ্ট।

গ্রামীণ টেলিকমের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে গত ২৯ জানুয়ারি অভিযোগপত্র দেয় দুদক। দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এটি জমা দেন। যা পরে আদালতে পেশ করা হয়। অভিযোগপত্রে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে ২৬ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের কথা বলা হয়। এ ছাড়াও অবৈধভাবে রূপান্তর স্থানান্তর করায় মানি লন্ডারিং ধারাও দেখানো হয়েছে অভিযোগপত্রে। মামলায় দুদক ১৩ জনকে আসামি করলেও অভিযোগপত্রে আরো একজনের নাম যুক্ত করা হয়।

অন্য আসামিরা হলেন গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম, সাবেক এমডি আশরাফুল হাসান, ৫ পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, আইনজীবী ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান এবং গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের প্রতিনিধি মাইনুল ইসলাম।

তার আগে ২০২৩ সালের ৩০ মে মামলা দায়েরের পর দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) রেজওয়ানুর রহমান সাংবাদিকদের মামলার কথা জানান। মামলার এজাহারে বলা হয়, অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের পাঁচ শতাংশ অর্থ লোপাট করা হয়। শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধের সময় অবৈধভাবে আইনজীবী ফি ও অন্যান্য ফির নামে ছয় শতাংশ অর্থ কেটে রাখা হয়। শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দ করা সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাৎ করা হয়। এছাড়া কোম্পানি থেকে দুই হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা পাচারের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়।

উল্লেখ্য, গত বুধবার ড. ইউনূসকে শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলা থেকেও খালাস দিয়েছেন আদালত।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর