ট্রাম্পের সহযোগিতা চাইলেন এরদোয়ান ।

সময়: 6:31 am - November 9, 2024 | | পঠিত হয়েছে: 24 বার

গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলের হামলা বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সহযোগিতা করতে আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান। সে ক্ষেত্রে  ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা একটি ভালো সূচনা হতে পারে বলে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি আশা করছেন, ট্রাম্প ইসরায়েলকে যুদ্ধ থামাতে বলবেন। ইসরায়েল এবং দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে ট্রাম্পের।

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার সময় তিনি দ্রুত সংঘাত বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে এরদোয়ান বলেছেন, ‘ট্রাম্প সংঘাত বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আমরা চাই তিনি সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করুন এবং ইসরায়েলকে থামতে বলুন।  কিভাবে ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নিতে পারেন, সে পথ বাতলে দিয়ে এরদোয়ান যোগ করেন, ফিলিস্তিন ও লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসন রুখতে যদি দেশটিকে অস্ত্র দেওয়া বন্ধ করেন ট্রাম্প, তাহলে সেটি একটি ভালো সূচনা হতে পারে।

এরদোয়ান সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ট্রাম্প যদি বর্তমান মার্কিন নীতি অব্যাহত রাখেন, তাহলে এতে মধ্যপ্রাচ্যে অচলাবস্থা আরো গভীর হবে এবং সংঘাত আরো ছড়িয়ে যাবে।

গাজায় হামলায় নিহতদের ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু : জাতিসংঘ

এদিকে গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় প্রাণ হারাচ্ছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। গতকাল শুক্রবার এ কথা জানিয়ে জাতিসংঘের  মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয় বলেছে, আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নীতির পদ্ধতিগত লঙ্ঘনের কারণেই এমনটি ঘটছে।

৩২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ছয় মাসে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহতদের তথ্য বিশ্লেষণ করে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয়। তারা জানায়, গাজায় হামলা শুরুর প্রথম ছয় মাসে সাড়ে ৩৪ হাজারের বেশি নিহতদের মধ্যে আট হাজার ১১৯ জনের তথ্য যাচাই করতে সক্ষম হয়েছে তারা। যাচাইকৃত তথ্যে নিহতদের মধ্যে তিন হাজার ৫৮৮টি শিশু ও দুই হাজার ৩৬ জন নারী রয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলগার তুর্ক বলেন, ‘আমাদের পর্যবেক্ষণে এটি ইঙ্গিত দেয়, গাজায় এমন নজিরবিহীন হত্যাযজ্ঞ ও বেসামরিক মানুষের আহত হওয়ার মাত্রা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের মৌলিক নীতিগুলো মেনে চলতে ব্যর্থতার প্রত্যক্ষ পরিণতি।’ গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলা চলছেই।

গতকাল ভোর থেকে উত্তর গাজায়  ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণে অন্তত ১৭ জন প্রাণ হারিয়েছে। গাজার অন্যান্য স্থানে হামলায় নিহত হয়েছে ছয়জন। মধ্য গাজায় দেইর আল বালাহ এলাকায় আবাসিক ভবন, কৃষিজমিগুলো লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ করেই চলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে বহু ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং অনেকে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ছে।

ইসরায়েলের হামলার মুখেও গতকাল সিভিল ডিফেন্স ও অ্যাম্বুল্যান্সগুলো দেইর আল বালাহ এলাকায় কার্যক্রম চালায়। এক বছরের বেশি সময় ধরে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।  হামলায় এ পর্যন্ত ৪৩ হাজার ৪৬৯ জন  ফিলিস্তিনি নিহত এবং এক লাখের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

লেবাননে নিহত ৫২

গাজার পাশাপাশি লেবাননেও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। লেবাননের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৫২ জন নিহত হওয়ার খবর জানায়। গাজা সংঘাত শুরুর পর থেকে লেবাননেও হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে  ইসরায়েলের সংঘাত বাধে, বিশেষ করে গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে দুই পক্ষের লড়াই তীব্র আকার নেয়। লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। গতকাল লেবাননের ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানায়, তিনটি সীমান্ত গ্রামে বাড়িঘর বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এসব গ্রামে বোমাবর্ষণও অব্যাহত রেখেছে তারা। এদিকে লেবাননের হিজবুল্লাহ বাহিনী গতকাল ইসরায়েলের হাফিয়া শহরের কাছে একটি নৌঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর দাবি করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ ধরনের দ্বিতীয় হামলা এটি।  ইরানভিত্তিক লেবাননী গোষ্ঠীটি বলেছে, হাফিয়া শহরের উত্তর-পশ্চিমে স্টেলা মারিস নৌঘাঁটি লক্ষ্য করে  একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তারা। ইসরায়েলের হামলা ও গণহত্যার বদলা নিতেই এই আক্রমণ চালানো হয়েছে বলে জানায় হিজবুল্লাহ। তারা আরো জানায়, হাফিয়া শহরের দক্ষিণ-পূর্বে রামাত ডেভিড বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তারা।

ইয়েমেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত ইসরায়েলের

ইসরায়েলি বাহিনী গতকাল জানিয়েছে, ইয়েমেন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করেছে তারা। ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার  সময় ইসরায়েলের কিছু এলাকায় বিপৎসংকেত বাজানো হয়েছে বলে জানায় তারা।

Share Now

এই বিভাগের আরও খবর